বর্তমান সরকারের ভূরাজনীতির সঙ্গে যুক্তদের নিয়ে মাথাব্যথা নেই: তথ্যমন্ত্রী

শনিবার দুপুরে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর লেনে নিজ বাসভবনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদছবি: বাসস

ভূরাজনীতির সঙ্গে যুক্তরা কী করছেন, সেটি নিয়ে বর্তমান সরকারের কোনো চিন্তাও নেই, মাথাব্যথাও নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সক্রিয়, বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন আমাদের দেশে হবে, আমাদের ভোটাররা কাকে ভোট দেবেন, সেটি তাঁরাই ঠিক করবেন। সুতরাং ভূরাজনীতির সঙ্গে যুক্তরা কী করছেন সেটি নিয়ে আমাদের চিন্তাও নেই, মাথাব্যথাও নেই।’

মন্ত্রী আজ শনিবার দুপুরে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর লেনে নিজ বাসভবনে স্থানীয় সুধীজনের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হয় না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন সরকারে ছিল, তারা ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সরকারের অধীনেই করেছিল। এখানেই বিএনপি গুলিয়ে ফেলেছে। সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে ফ্যাসিলেট করবে। বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা যতই দাবি দিক না কেন, সংবিধানের একচুলও ব্যত্যয় হবে না।’

ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ পৃথিবীর অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।

শীর্ষ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর ‘ব্রিকস’ জোটে বাংলাদেশের যোগদানের বিরোধিতা করে বিএনপি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিরও বিরোধী, সেটাই প্রমাণ করেছে বলে মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব এই শুভ উদ্যোগকে যেভাবে সুবিধাবাদী পদক্ষেপ বলেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

শুক্রবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদান আমাদের জন্য শুভকর নয়’—এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, সাউথ আফ্রিকার জোট ব্রিকসের উদীয়মান অর্থনীতির শক্তিকে সবাই সমীহ করে। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তারা ব্রিকসে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদা ও সম্মানের এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, তার স্বীকৃতি। সেখানে যোগ দিলে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সুবিধা হবে। কিন্তু মির্জা ফখরুল সাহেবরা তা চান না।’

বিএনপি মহাসচিবের অপর এক মন্তব্য—‘এক বছর ধরে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত নয়’ এই বিষয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের এ বক্তব্য রেকর্ডেড এবং তাঁরা যে আগে থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে, তাঁর বক্তব্যের মাধ্যমেই তা স্বীকার করে নিয়েছেন।’

এক বছর ধরে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নয়, সেটিও সঠিক নয় উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, গত কয়েক মাসে তারা বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে, বাসে আগুন দিয়েছে, চট্টগ্রামের জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্যমণ্ডিত ছবি ভাঙচুর করেছে। অর্থাৎ মির্জা ফখরুল সাহেব যতই বলুন না কেন, তাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেই আছেন।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই বিভাগের সর্বশেষ