‘চারপাশে শুধু পানি আর পানি। জন্মের পর ৬০ বছরের মধ্যে এবারের মতো এত পানি দেখিনি। পানি নামার কোনো লক্ষণ দেখি না। পুরো কোম্পানীগঞ্জের অবস্থাই খারাপ। সরকার থেকে কিছু বরাদ্দ দিয়েছে কিনা তাও আমাদের জানা নেই। আমরা কোনো ত্রাণ পাইনি।’

তিনি বলেন, পানিতে রান্নাঘর, বসতঘর, টয়লেটসহ বাড়ির সবকিছু ডুবে গেছে। মানুষ না খেয়ে আছে। ঘরের জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রেও জায়গা নেই। দূরের মানুষরা সেখানে আশ্রয় নেওয়ায় এখন আমাদের আর যাওয়ার জায়গা নেই।
একই এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়া বলেন, আমাদের মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। প্রায় ৭ লাখ টাকার মাছ ছিল। বন্যায় সব শেষ হয়ে গেছে। আল্লাহ জানে আমাদের ভাগ্যে কি আছে। পানি কেবল বাড়ছেই। আমাদের সবার মানবিক হওয়া দরকার। যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তাতে সামনে আরও দুর্ভোগ আছে।
শাকিল হোসেন নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, খাল দখল করে প্রভাবশালীরা দোকানপাট নির্মাণ করেছেন। এর ফলে আরও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আজ তা ভয়াবহ বন্যায় রূপ নিয়েছে। সহায়তা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেনি। খাল দখলমুক্ত করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখলে আমাদের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যেত।

চর ফকিরা ইউনিয়নের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, বৃষ্টি থামার কোনো উপায় নেই। বজ্রসহ ভারী বর্ষণ হচ্ছে। আমাদের এদিকের পানি সাগরে যায়। যদি বৃষ্টি বন্ধ হয় তাহলে পানি কমে যাবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে যারা আছেন তাদের মধ্যে আমরা সরকারি সহায়তা দিচ্ছি। এ দুর্যোগের সময় বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। তাছাড়া কোথাও কেউ আটকে থাকার খবর পেলেই আমরা উদ্ধারের ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ফেনীর পার্শ্ববর্তী হওয়ায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি অনবরত না হলে আমাদের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যেত। আমরা বৃষ্টির কারণে খাবার প্যাকেটিং করতে পারছি না। তারপরও প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা তাদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি এবং এটি চলমান থাকবে। জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আমরা চাই মানুষ যেন উঁচু জায়গায় অবস্থান নেন।










