উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের অবরুদ্ধ এল-ফাশের শহরে আধা-সামরিক বাহিনীর হামলায় ৩০ জনের বেশি বেসামরিক নিহত হয়েছেন। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চলে এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন। সোমবার সুদানের স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রোববার এল-ফাশের শহরের আবাসিক এলাকা নিশানা করে হামলা চালিয়েছে আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। হামলায় ৩০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক হয়েছেন। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা বলেছেন, আরএসএফের নির্বিচার হামলায় কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুদানের নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশটির সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর জেনারেলদের মাঝে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে লড়াই চলছে। দেশটির বিভিন্ন এলাকা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) খার্তুম উত্তর ও রাজধানীর অন্যান্য কিছু এলাকার দখল নিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে দুই বাহিনীর চলা সংঘাতে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছে। আধাসামরিক বাহিনী জাতিগত নিধন ও নারীদের ওপর পরিকল্পিত যৌন সহিংসতা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এছাড়া এই সংঘাতে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যে কারণে দেশটিতে সর্বকালের বৃহত্তম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি।
দেশটির নর্থ দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশেরের নিয়ন্ত্রণ এখনও নিতে পারেনি আরএসএফ। দারফুর অঞ্চলের বিশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে রয়েছে। অবরুদ্ধ এই শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে হামলা চালিয়ে আসছে আরএসএফ।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে এল-ফাশের শহরে নতুন করে হামলা শুরু করেছে আরএসএফ। শহরের পার্শ্ববর্তী জামজাম এবং আবু শোউক নামের দুটি শরণার্থী শিবিরে আরএসএফের হামলায় ৪০০ জনেরও বেশি বেসামরিক নিহত হয়েছেন। এক সপ্তাহ ধরে চালানো এই হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও প্রায় ৪ লাখ মানুষ।
সূত্র: এএফপি।










